বুধবার, রাত ১১:০৫, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বুধবার, রাত ১১:০৫, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“আরাকান আর্মির ভিডিওগুলোর সবকিছু পুরোপুরি সত্য নয়, তবে একেবারেই মিথ্যা বলাও যাবে না” — স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশে আরাকান সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের এসে সাংগ্রাই উৎসব পালনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া নিয়ে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “এসব ভিডিওর সব কিছু সত্য নয়, আবার সবটাই মিথ্যাও নয়।”

বুধবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “আরাকান আর্মি অনেকদিন ধরেই লড়াই করছে। তাদের কেউ কেউ এপারে এসে বিয়েও করেছে—এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু ভিডিওতে যেভাবে দেখানো হচ্ছে, বাস্তবতা ঠিক তেমন নয়। টিকটক ভিডিও নানা কায়দায় বানানো যায়। তাই সবটাই সত্য বলা যায় না, আবার সবটাই মিথ্যাও না।”

সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “সীমান্ত এলাকা বেশ জটিল। এখানে ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সীমান্তের কিছু অংশ এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এমনকি মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে গেলে মিয়ানমার সরকারকেও ট্যাক্স দিতে হয়, আবার আরাকান আর্মির লোকজনও টাকা নিচ্ছে। এটা একটা সমস্যা, যেটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে সীমান্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে।”

পাহাড়ে সাম্প্রতিক অপহরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি পাহাড়ে তিনবার দায়িত্ব পালন করেছি। এখনকার পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভালো। এই ধরনের অপহরণ ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন, সমতলেও এমন ঘটনা ঘটে। একে কেন্দ্র করে পাহাড়কে দোষারোপ করা উচিত নয়।”

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “আমি বাঘাইহাটে ছিলাম, তখন ল্যান্ডমাইন দিয়ে পিকআপ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন তো সেই রাস্তায় সাজেক ঘুরতে যান পর্যটকরা। এখনকার পাহাড় অনেক শান্ত।”

রাউজানে খুন-সন্ত্রাস বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বিভাগের সমস্যা একটু আলাদা। পাহাড়, সমতল, বনাঞ্চল আর সমুদ্র—সব একসঙ্গে আছে এখানে। অপরাধীরা অনেক সময় পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে যায়। আমরা এসব বিষয়ে আলোচনা করেছি এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”

যৌথবাহিনীর অভিযান বন্ধ হয়নি বলেও জানান তিনি। বরং, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এই অভিযান চলমান রয়েছে এবং এর ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে।

গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ঘটনার সত্যতা যাচাই করে সংবাদ প্রকাশ করুন। এতে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। কিন্তু যদি মিথ্যা তথ্য ছড়ায়, তখন সমস্যা হয়, কারণ পাশের দেশের কিছু মিডিয়া এর অপব্যবহার করে।”

এসময় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশও উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top