নাজমুল হোসেন,স্টাফ রিপোর্টার-
রাজবাড়ী সদর উপজেলার এলাইল ফুরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসায় যেতে অতিরিক্ত চাপ দেয়ায় গলায় ফাঁস নিয়ে সিয়াম মন্ডল (১১) নামের এক ছাত্র আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভকলা ইউনিয়নের চরবরাট এলাকার নিজ বাড়িতে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত সিয়াম মন্ডল স্হানীয় জয়নাল মন্ডলের ছেলে পুলিশ ও স্হানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাফেজ বানানোর আশা নিয়ে অভিভাবকরা সিয়ামকে তিন বছর আগে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয়। ইতিমধ্যে সে ১০ পারা কোরআন হেফজ সম্পন্ন করে। কিন্তু পড়াশোনায় সে খুবই অমনোযোগী ছিল। সেখানে থাকতে তাঁর ভালো লাগত না। মাঝে মধ্যেই সে পালিয়ে বাড়ি চলে আসতো। এতে করে বাবা-মা তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বকাঝকা করার পাশাপাশি মারধর করত। সূত্র জানায়, ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে সে ছুটিতে বাড়ি আসে। ১৮ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে বাবা-মা তাঁকে মাদ্রাসায় ফেরত যেতে বলে। কিন্তু সে মাদ্রাসায় ফেরত যেতে অনীহা প্রকাশ করে। ফলে সিয়ামের মা-বাবা অনেক রাগারাগি করে। এতে করে মনোক্ষুন্ন হয়ে অভিমানী সিয়াম সন্ধ্যার পর তাঁদের গোয়ালঘরে আড়ার সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। সংবাদ পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এস আই মো. জুয়েল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ হেফাজতে নিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, নিহত মাদ্রাসা ছাত্র সিয়ামের বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার পারিবারিক ভাবে স্হানীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। তিনি আরও বলেন, শিশুদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁদের উপর অভিভাবকদের ইচ্ছে চাপিয়ে দেয়া খুবই খারাপ কাজ। এটা কখনোই ভাল ফলাফল বয়ে আনে না। উন্নত দেশগুলোতে বাচ্চাদের উপর কখনোই অভিভাবকরা এমনটা করে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ছবি যুক্ত: নাজমুল হোসেন,স্টাফ রিপোর্টার