বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার ঘটনায় ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে একটি নির্দিষ্ট সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করার প্রয়োজন হয়, যা বাংলাদেশে অনুসরণ করা হয়নি বলে তাদের ধারণা।
আজ মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন। কারণ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ক্ষুণ্ন হলে তা শুধু একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলে।”
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারত–পাকিস্তান পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় নিয়মিত ব্রিফিং স্থগিত ছিল। আজ পুনরায় শুরু হওয়া ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা মূলত ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করলেও বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গটিও উঠে আসে।
উত্তরে জয়সোয়াল বলেন, “গণতন্ত্রে কাজের একটি স্বীকৃত প্রক্রিয়া আছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এটি উদ্বেগজনক।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত সবসময় চেয়েছে বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। বর্তমান পরিস্থিতি সে লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
প্রসঙ্গত, গত শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্তে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থে দলটির সব কার্যক্রম সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ থাকবে।
পরদিন সোমবার সরকারিভাবে এ নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।