চার মাস পর দেশে ফিরে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত
চার মাস লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজায় পৌঁছাতে সময় লাগে দুই ঘণ্টারও বেশি। এ সময় বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়ে তার গাড়িবহর ধীরে এগোয় এবং নিরাপত্তার কারণে রুট পরিবর্তন করতে হয়।
গুলশানে ফিরোজার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, লন্ডনে দীর্ঘ চিকিৎসার পর খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই সুস্থ। ১৪ ঘণ্টার দীর্ঘ ভ্রমণের কারণে কিছুটা শারীরিক অবসাদ থাকলেও মানসিকভাবে তিনি স্থিতিশীল। তার সুস্থতা অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
ডা. জাহিদ জানান, খালেদা জিয়া লন্ডনের ‘লন্ডন ক্লিনিক’-এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। টানা ১৭ দিন হাসপাতালে থাকার পর তিনি তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ৭৯ বছর বয়সী এই নেত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও যাত্রা-সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সহযোগিতা করায় কাতারের আমির, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ডা. জাহিদ আরও বলেন, খালেদা জিয়ার মানসিক সুস্থতায় তার পরিবারের সদস্য, বিশেষ করে তিন নাতনি—ব্যারিস্টার জায়মা রহমান, জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি ইউকে বিএনপি ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসী নেতাকর্মীদের সহযোগিতার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, চিকিৎসক ও লন্ডন বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।