উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, দেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
তারিখ: ২১ আগস্ট
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশে নতুন করে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যা এখনই প্রতিহত না করলে দেশের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভার প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ দেশে আবার ষড়যন্ত্র চলছে। এক ধরনের উগ্রবাদী চিন্তাধারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এটি যদি রুখে না দেওয়া যায়, তাহলে বাংলাদেশ তার অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারবে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। ফখরুল বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের স্বাধীন ভূখণ্ড ও জাতিসত্তা দিয়েছে। সেই ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতির জন্য হুমকি। এই ধারা থেকে বেরিয়ে এসে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে নিয়ে মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই দেশ কারও একার নয়। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সবাই এই দেশের নাগরিক। সংকটের সময় আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকলেই তারেক রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন সফল হবে।’
ভগবান কৃষ্ণের জন্ম ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুগে যুগে অন্যায়-অবিচার বেড়ে গেলে অবতার আবির্ভূত হয়েছেন। ইসলামসহ সব ধর্মেই নবী-রাসুলরা মানুষকে সঠিক পথে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ আমাদেরও সেই ঐক্যের বার্তা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার জনগণকে বন্ধু নয়, প্রজা মনে করেছে। দমন-পীড়নের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৮৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিকে চরম সংকটে ফেলেছে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।
Search
Study