
ডার্ক ম্যাটার (Dark Matter) হলো এমন এক রহস্যময় পদার্থ যা মহাবিশ্বের প্রায় ৮৫% পদার্থের অংশ, কিন্তু একে আমরা চোখে দেখতে, আলো দিয়ে শনাক্ত করতে বা মাপতে পারি না — কারণ এটি আলো শোষণ, বিকিরণ বা প্রতিফলন করে না।
নিচে সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হলো 👇
ডার্ক ম্যাটার কীভাবে টের পাই
আমরা সরাসরি ডার্ক ম্যাটার দেখতে পাই না, কিন্তু এর মাধ্যাকর্ষণ প্রভাব থেকে এর অস্তিত্ব বোঝা যায়।
- গ্যালাক্সিগুলো (Galaxy) যেভাবে ঘোরে, তাতে দেখা যায় দৃশ্যমান পদার্থের তুলনায় অনেক বেশি ভর আছে।
- দূরবর্তী নক্ষত্রের আলো যখন বাঁক নেয় (যা গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং নামে পরিচিত), তখনও বোঝা যায় কোনো অদৃশ্য পদার্থ সেখানে প্রভাব ফেলছে।
ডার্ক ম্যাটারের প্রমাণ
১. গ্যালাক্সির ঘূর্ণন: গ্যালাক্সির বাইরের তারাগুলো প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত ঘোরে—মানে অদৃশ্য কোনো ভর তাদের ধরে রেখেছে।
২. আলো বাঁকা হওয়া: দূরের গ্যালাক্সির আলো বেশি বাঁকছে, যা দৃশ্যমান ভর দিয়ে বোঝানো যায় না।
৩. কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড (CMB): মহাবিশ্বের প্রাচীন বিকিরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডার্ক ম্যাটার ছাড়া সেই প্যাটার্ন মিলছে না।
৪. গ্যালাক্সির বিন্যাস: মহাবিশ্বে গ্যালাক্সিগুলোর ছড়িয়ে থাকা ধরনও ডার্ক ম্যাটার থাকার ইঙ্গিত দেয়।
ডার্ক ম্যাটার আসলে কী হতে পারে
বিজ্ঞানীরা কিছু সম্ভাব্য কণা নিয়ে ধারণা দিয়েছেন—
- WIMPs (Weakly Interacting Massive Particles): ভারী কণা, যা সাধারণ পদার্থের সঙ্গে খুব দুর্বলভাবে প্রতিক্রিয়া করে।
- Axions: অতি হালকা, কাল্পনিক কণা যা ডার্ক ম্যাটারের মতো আচরণ করতে পারে।
- Sterile Neutrinos: এমন এক ধরনের নিউট্রিনো যা সাধারণভাবে শনাক্ত করা যায় না।
যা ডার্ক ম্যাটার নয়
- এটি সাধারণ পদার্থ নয় (যেমন প্রোটন, নিউট্রন, ইলেকট্রন)।
- এটি ব্ল্যাক হোল বা অন্ধকার গ্যাসের মেঘ নয়।
এটি গুরুত্বপূর্ণ কেন
ডার্ক ম্যাটার ছাড়া আমরা—
- গ্যালাক্সি ও মহাবিশ্বের গঠন ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি না,
- এবং পদার্থবিজ্ঞানের বর্তমান তত্ত্ব (Standard Model) সম্পূর্ণ করতে পারি না।